১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশে এটি জাতীয়ভাবে উদযাপিত একটি ঐতিহাসিক দিন। এমন দিনে সুদূর ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাদেরকেই হারিয়ে দিনটিকে আরও রঙিন করে তুলল টাইগাররা।
সোমবার সকালে সেন্ট ভিনসেন্টে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করে খুব বড় সংগ্রহ করতে না পারলেও সৌম্য সরকারের ৩২ বলে ৪৩ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে বাংলাদেশ ১৪৭ রানের লক্ষ্য দেয় স্বাগতিকদের। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ পর্যন্ত এক বল বাকি থাকতে ১৪০ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। আর তাতেই ৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১০ রান। ক্রিজে তখন ভয়ংকর রোভম্যান পাওয়েল। রোমারিও শেফার্ডের সঙ্গে তার ৩৩ বলে ৬৭ রানের পার্টনারশিপ প্রায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছিল। তবে টাইগার পেসার হাসান মাহমুদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেয়। ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাওয়েল। এরপর এক বল বিরতি দিয়ে হাসান আলজারি জোসেফকে বোল্ড করলে নিশ্চিত হয় দারুণ এই জয়।
টাইগারদের বোলিং আক্রমণের অন্যতম সেরা অস্ত্র ছিলেন মেহেদি হাসান। সপ্তম ওভারে বল করতে এসে তিনি তুলে নেন দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট—আন্দ্রে ফ্লেচার ও রস্টন চেজ। এই দুই উইকেট তুলে নিয়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসকে ধসিয়ে দেন। ৪ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট নেওয়া মেহেদি ম্যাচের সেরা বোলার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেন।
ব্যাটিংয়ে টাইগারদের শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ১১ বলে মাত্র ৬ রান করে ফিরলে দল পড়ে চাপে। এরপর অধিনায়ক লিটন দাস গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরত গেলে বিপদ আরও বাড়ে। তবে সৌম্য সরকার ও জাকের আলি অনিকের ৪২ বলে ৫৭ রানের জুটি দলের ইনিংসকে স্থিতি দেয়।
শেষদিকে শামীম পাটোয়ারীর ১৩ বলে ঝোড়ো ২৭ রান দলকে ১৪৭ রানের লড়াকু পুঁজি এনে দেয়। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে সম্মানজনক সংগ্রহ গড়ে টাইগাররা।
১৬ই ডিসেম্বরের বিজয় দিবসে এমন একটি রোমাঞ্চকর জয় দেশের মানুষের আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। টাইগারদের এই জয় যেন ১৯৭১ সালের বিজয়ের চেতনাকেই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিল।